বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর এখন সবার দৃষ্টি এর প্রতিষেধক এবং ওষুধের দিকে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলেছে, এই সংক্রমণের কার্যকর ওষুধ বা প্রতিষেধক এখন পর্যন্ত উদ্ভাবিত হয়নি। তবে এমন ওষুধ উদ্ভাবনে দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে করোনার সংক্রমণের চিকিৎসায় জাপানে তৈরি একটি ওষুধ প্রয়োগ করে সুফল পাওয়ার দাবি করেছে চীনা কর্তৃপক্ষ।
চীনে ২০০২ সালে দেখা দেওয়া সার্স-করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। ভাইরাসটির জিনোম সিকোয়েন্স জানার পর এটি প্রতিরোধে প্রতিষেধক উদ্ভাবন করতে বিজ্ঞানীদের সময় লেগেছিল ২০ মাস। জিকা ভাইরাসের সংক্রমণের শুরুটা হয়েছিল ২০১৫ সালে। আর প্রতিষেধক উদ্ভাবন করতে সময় লেগেছিল ছয় মাস।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধের লড়াইয়ের ক্ষেত্রে আশার কথা হলো, ভাইরাসটির সংক্রমণ শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই এর জিনোম সিকোয়েন্স জানতে পেরেছেন বিজ্ঞানীরা। গত ৩১ ডিসেম্বর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানতে পারে, চীনের উহানে অজ্ঞাত কারণে মানুষ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। এর ১০ দিনের মাথায় ৯ জানুয়ারি চীনের রোগনিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ সংস্থা জানায়, তাদের বিজ্ঞানীরা নতুন করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্স জানতে পেরেছেন। সার্স-করোনাভাইরাসের গোত্রেরই ভাইরাস এটি। এর দুই মাসের মাথায় যুক্তরাষ্ট্রে প্রথমবারের মতো করোনার প্রতিষেধক পরীক্ষামূলকভাবে মানুষের শরীরে প্রয়োগ শুরু হয়েছে। এ ব্যাপারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালক তেদরোস আধানোম গেব্রিয়াসুস গত বুধবার বলেন, টিকার কার্যকারিতা যাচাইয়ে প্রাথমিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে। চীন যেদিন এই ভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের ফলাফল জানায়, তার থেকে ঠিক ৬০ দিনের মাথায় এটা করা সম্ভব হলো। এটা দারুণ অগ্রগতি।
বিবিসি ও সিএনএনের তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে গত সোমবার ৪৩ বছর বয়সী এক নারীর দেহে পরীক্ষামূলকভাবে করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগ করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ওই নারীসহ চারজনের শরীরে প্রতিষেধকটি প্রয়োগ করা হয়েছে। প্রতিষেধকটি উদ্ভাবন করেছে মার্কিন জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান মডার্না থেরাপেটিকস। যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের অর্থায়নে এখন এই প্রতিষেধকের পরীক্ষা চলছে। এটি আসলে প্রতিষেধক পরীক্ষার প্রথম ধাপ। এরপর আরও কয়েক ধাপে সফল হলে তা সবার ব্যবহারের জন্য নিরাপদ বলে স্বীকৃতি পাবে